হিন্দুদের পূজায় মুসলিমদের অংশগ্রহণ কতটুকু বৈধ ?

আমাদের অনেক মুসলিম ভাই-বোনদের দেখা যায় যে হিন্দুদের বিভিন্ন পূজা এবং অনুষ্ঠানে গিয়ে রোমান্স করতে! কিন্তু এইটা কি মুসলিমদের জন্য বৈধ? আপনি বলতে চান আমি তো সেখানে পূজা করতে যাচ্ছি না, শুধুমাত্র দেখতে যাচ্ছি। কিন্তু কেন? কোন হিন্দু কি আপনার সাথে মসজিদে গিয়ে দেখতে যাই যে আপনি মসজিদে গিয়ে কি করেন? সে তো আর নামায পড়বে না। তবু কি দেখতে আসে!


এবার আসি- হিন্দুদের পূজা কি একটি উৎসব নাকি ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান? অবশ্যই হিন্দুরা বলবে ধর্মীয় অনুষ্ঠান । যে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তারা তাদের ঈশ্বর কে পাওয়ার চেষ্টা করে। তাহলে মুসলমানগণের জন্য মহান আল্লাহ পাক উনাকে পেতে কি কোন পদ্ধতির অভাব পরেছে যে হিন্দুদের পূজায় গিয়ে ঈশ্বর কে খুঁজতে হবে?


উমার ইবনে খাত্তাব বলেছেন "তোমরা মুশরিকদের উপসনালয়ে তাদের উৎসবের দিনগুলোতে প্রবেশ করোনা। কারন সেই সময় তাদের উপর আল্লাহর গযব নাযিল হতে থাকে। (বায়হাক্বী)


আল্লাহর নাম, বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলী সম্পর্কে আমাদের যদি বিস্তারিত জ্ঞান থাকে তাহলে(পূজা দেখতে গিয়ে ) এতগুলো মানুষকে শিরক করতে দেখে আমাদের মাঝে চরম বিতৃষ্ণা ও হাহাকারের (এদের পারলৌকিক পরিণতি চিন্তা করে) অনুভূতি জাগ্রত হওয়া উচিৎ।


আর আপনি যদি বলেন, ধর্ম যারা যার উৎসব সবার! তাহলে আপনি কি কোরআন হাদিসকে অস্বীকার করবেন? আর কোরআন হাদীস অস্বীকার কারী কিভাবে মুসলমান হয়? আর ধর্ম যার যার উৎসব সবার কথাটা কি কোরআন-হাদিসের কথা?


অথচ আবদুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন" যদি কেউ কোণ সম্প্রদায়ের অনুকরন করে ,তাহলে সে উক্ত সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত বলে গন্য হবে" (আবু দাউদ, আস সুনান ৪/৪৪)


তবে অনেকে উৎসুক ভাবেই যায়। ঐ সমস্ত মুসলিমদের যদি বলি- ভাই হিন্দুদের পূজায় অংশগ্রহন করো না, উৎসুক ভাবেও যেও না, তাদের দেব- দেবীর নামে উৎসর্গকৃত প্রসাদও খেওনা। তখন তারা উত্তরে খুব বুক ফুলিয়েই বলে- গেসি তো কি হয়েছে? গেলেই কি আমি হিন্দু হয়ে যাব? আমার ঈমান ঠিক আছে। এখন একটু ভেবে দেখুন, মূর্তিপূজা হচ্ছে আল্লাহর সাথে শির্ক করা। আর শির্ক হচ্ছে সবচেয়ে বড় অন্যায়, সবচেয়ে বড় অপরাধ। মহান আল্লাহ্ বলেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ্র সাথে শির্ক হচ্ছে সবচেয়ে বড় অন্যায়। (সুরা লুকমানঃ ১৩) আর শির্কের অপরাধ আল্লাহ্ কখনো ক্ষমা করবেন না। মহান আল্লাহ্ বলেনঃ "নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সাথে অংশী স্থাপন করলে তাকে ক্ষমা করবেন না, কিন্তু এর চেয়ে ছোট পাপ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন, এবং যে কেউ আল্লাহর অংশী স্থির করে, সে মহাপাপে আবদ্ধ হয়েছে। (সূরা নিসাঃ ৪৮)। এখন দেখুন, সবচেয়ে বড় অন্যায় আপনার সামনে হচ্ছে। আর রাসুল (সাঃ) বললেন- তোমাদের কেউ কোন গর্হিত/ অন্যায় কাজ হতে দেখলে সে যেন নিজের হাতে (শক্তি প্রয়োগে) তা সংশোধন করে দেয়, যদি তার সে ক্ষমতা না থাকে তবে যেন মুখ দ্বারা তা সংশোধন করে দেয়, আর যদি তাও না পারেতবে যেন সে ঐ কাজটিকে অন্তর থেকে ঘৃণা করবে। আর এটা হল ঈমানের নিম্নতম স্তর। [সহিহ মুসলিম, ঈমান অধ্যায়, হাদিস নং ৭৮] অথচ আপনি ঐ অন্যায়কে বাঁধা তো দেনই না, মনথেকেও ঘৃণা করেন না বরং ঐ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করে মনে মনে উপভোগ করেন। অন্তত মন থেকে ঘৃণা করলেও দুর্বলতম ঈমানদার হিসেবে আপনার ঈমান থাকত কিন্তু ঐ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করে তাদের অনুষ্ঠান মনে মনে উপভোগ করার পরেও কি আপনি দাবী করবেন যে- আপনার ঈমান ঠিক আছে? তাই হিন্দুদের পূজার উৎসবে কোন মুসলিমের যাওয়া অবশ্যই হারাম।

Post a Comment

Previous Post Next Post